কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত শেয়ার, বন্ড ও ডিবেঞ্চার বিনিয়োগকারীদের জন্য একেকটি বিনিয়োগ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়। বিনিয়োগের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত এসব বিনিয়োগ হাতিয়ারের প্রত্যেকটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। এসব বিনিয়োগ হাতিয়ার থেকে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত আয় এবং ঝুঁকিতে ভিন্নতা থাকে। ফলে একজন বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে প্রত্যেকটি বিনিয়োগ হাতিয়ারের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার। এ অধ্যায়ে আমরা বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে এসব বিনিয়োগ হাতিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারব।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
পূর্ববর্তী অধ্যায়গুলোতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের উৎস হিসেবে সাধারণ শেয়ার, অগ্রাধিকার শেয়ার বন্ড ও ডিবেঞ্চার সম্পর্কে জেনেছ। কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত এসব অর্থায়নের হাতিয়ার বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের খাত হিসেবে বিবেচিত হয়। একজন বিনিয়োগকারী বিভিন্ন খাতে তার অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে। মনে কর, তোমার বাবার ১০ লক্ষ টাকা আছে। এই দশ লক্ষ টাকা তিনি ইচ্ছে করলে কোনো ব্যাংকে স্থায়ী জামানত হিসেবে রাখতে পারে অথবা তিনি উক্ত টাকা দিয়ে কোনো কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত সাধারণ শেয়ার, অগ্রাধিকার শেয়ার, বন্ড এবং ডিবেঞ্চার এদের যেকোনো এক বা একাধিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারে। বিনিয়োগের খাত হিসেবে এদের প্রত্যেকটির নিজস্ব স্বকীয়তা রয়েছে। এদের প্রতিটি থেকে বিনিয়োগকারীর আয় এবং ঝুঁকিতে ভিন্নতা রয়েছে। পরবর্তী অনুচ্ছেদগুলোতে বিনিয়োগের খাত হিসেবে এদের প্রতিটির স্বকীয়তা, সুবিধা-অসুবিধা এবং তুলনামূলক বিচার আলোচনা করা হয়েছে।
পাবলিক লি: কোম্পানির তহবিল বা মূলধন সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে শেয়ার বিক্রয়। শেয়ার হচ্ছে বড় অংকের মূলধনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য কোম্পানী সংগঠনগুলো বিভিন্ন প্রকার শেয়ারের প্রচলন করে থাকে।
নিম্নে বিভিন্ন প্রকার শেয়ার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
বড় অংকের মোট মূলধনকে ছোট ছোট খণ্ডে বিভক্ত করে শেয়ার হিসাবে বিক্রয় করা হয়। সরকারের অনুমতি নিয়ে ন্যূনতম মূলধন সংগ্রহের পর সংবাদপত্রের মাধ্যমে বিবরণপত্র ছাপিয়ে কোম্পানিটি সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়ে জনগণের নিকট শেয়ার ক্রয়ের আবেদন চাওয়া হয়। অনেক আবেদন পড়লে লটারির মাধ্যমে শেয়ার বণ্টন করা হয়। ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার কিনে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারে। এরাই প্রকৃত পক্ষে কোম্পানির মালিক। প্রতিষ্ঠানের লাভ হলে এদের মধ্যেই মুনাফা লভ্যাংশ হিসাবে বণ্টিত হয়। শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতযোগ্যনয়। তবে তারল্যের প্রয়োজন পড়লে শেয়ারহোল্ডাররা সেকেন্ডারি মার্কেটে (যেমন: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) এই শেয়ার বিক্রয় করতে পারে এবং সেখানে মূল্য বৃদ্ধি পেলে তাদের লাভ হয়। সাধারণত লাভজনক কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডাররা নিয়মিতভাবে লভ্যাংশ পেয়ে থাকে। তবে লভ্যাংশ প্রদানের কোনো নির্দিষ্ট হার পূর্ব নির্ধারিত থাকে না। কোম্পানির জন্য লভ্যাংশ প্রদান করা বাধ্যতামূলকও নয়। মুনাফা না হলে সাধারণত লভ্যাংশ প্রদান করা হয় না। মুনাফা হলেও সম্পূর্ণ অংকের মুনাফা লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টন করা হয় না। কোম্পানি ইচ্ছে করলে যেকোনো হারে লভ্যাংশ প্রদান করতে পারে, আবার লভ্যাংশ নাও প্রদান করতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ লভ্যাংশ প্রদান করতে না পারলে সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, যা কোম্পানির জন্য ভালো নয়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয় একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। শেয়ার ইস্যুকারী কোম্পানি সবসময় শেয়ার মালিকদের লভ্যাংশ দিতে বাধ্য থাকে না। কোনো বছর কোম্পানি পর্যাপ্ত মুনাফা করতে না পারলে শেয়ার মালিকদের কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হয় না। আবার কোম্পানির অবসায়নকালে সম্পত্তি বিক্রি হতে প্রাপ্ত অর্থ থেকে সকল পাওনাদার এবং অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি মেটানোর পর সাধারণ শেয়ার মালিকদের দাবি মেটানো হয়। ফলে সব দাবি মেটানোর পর কোনো অবশিষ্ট অর্থ না থাকলে সাধারণ শেয়ার মালিকরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিবর্তে কিছুই না পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব কারণে সাধারণ শেয়ারে বিনিয়োগ অপেক্ষাকৃত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয় । তবে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ বিধায় এরকম শেয়ার থেকে আয়ের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করলে সাধারণ শেয়ার একজন বিনিয়োগকারীর জন্য একটি ভালো বিনিয়োগ উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিনিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে সাধারণ শেয়ারের কিছু স্বকীয়তা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো বর্ণনা করা হলো:
ক) সাধারণ শেয়ার বিনিয়োগকারীকে কোম্পানির মালিকানা দেয়। ফলে কোম্পানির মালিক হিসেবে এর অর্জিত লাভ এবং সম্পত্তির উপর আইনগত অধিকার থাকে।
খ) সাধারণ শেয়ার এর মালিকদের কোম্পানি নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা দেয়। শেয়ার মালিকরা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার মাধ্যমে কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
গ) সাধারণ শেয়ার সহজে হস্তান্তরযোগ্য। বিনিয়োগকারী ইচ্ছে করলে যেকোনো সময় তার ধারণকৃত শেয়ার হস্তান্তর করতে পারে।
সুবিধা
ক) অধিক আয় : বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করলে সাধারণ শেয়ার একজন বিনিয়োগকারীর জন্য ভালো আয়ের উৎস হতে পারে। বিনিয়োগের অন্যান্য হাতিয়ার যেমন: অগ্রাধিকার শেয়ার, বন্ড ও ডিবেঞ্চার থেকে বিনিয়োগকারীর প্রাপ্ত আয় নির্দিষ্ট থাকে। কিন্তু সাধারণ শেয়ার থেকে আয় নির্দিষ্ট থাকে না। ফলে কোম্পানি অধিক আয় করলে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্ত আয়ও বৃদ্ধি পায় ।
খ) সীমাবদ্ধ দায় : সাধারণ শেয়ার মালিকরা যৌথভাবে কোম্পানির ঝুঁকি বহন করে। কোনো অবস্থাতেই একজন বিনিয়োগকারীর ঝুঁকি তার বিনিয়োগকৃত অর্থের অধিক হয় না। উদাহরণস্বরূপ, মনে কর একজন বিনিয়োগকারী কোনো কোম্পানির ১০ টাকা মূল্যের ১০০টি শেয়ার ক্রয় করেন, ফলে তার দায় সর্বোচ্চ ১০×১০০ = ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
গ) তারল্য : সাধারণ শেয়ার বিনিয়োগকারীর কাছে তরল সম্পদ হিসেবে সমাদৃত। বিনিয়োগকারী যেকোনো সময় ইচ্ছে করলে তার ধারণকৃত শেয়ার বিক্রি করে নগদ টাকা সংগ্রহ করতে পারে। তবে সব কোম্পানির শেয়ারের তারল্যতা সমান হয় না। সাধারণত বড় এবং ভালো কোম্পানির শেয়ারের তারল্য অন্য কোম্পানিগুলোর চেয়ে বেশি হয়।
অসুবিধা
ক) ঝুঁকি : সাধারণ শেয়ারে বিনিয়োগ অপেক্ষাকৃত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। শেয়ারবাজারে অনেক ফটকা বিনিয়োগকারী থাকে, ফলে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ না করলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
খ) মুনাফা ও সম্পত্তি বণ্টনে অধিকার : কোম্পানি মুনাফা বণ্টনে সবার দায় তথা অগ্রাধিকার শেয়ার, বন্ড ও ঋণপত্র মালিকদের প্রাপ্য আয় পরিশোধের পর অবশিষ্ট মুনাফার উপর সাধারণ শেয়ার মালিকদের অধিকার থাকে। অনুরূপভাবে কোম্পানির অবসায়নকালে সম্পত্তি বিক্রির প্রাপ্ত অর্থ থেকে কোম্পানির সব দায় পরিশোধ করার পর অবশিষ্ট অর্থ শেয়ার মালিকরা ভাগাভাগি করে নেয়। অর্থাৎ, উভয় ক্ষেত্রেই অগ্রাধিকার শেয়ার, বন্ড ও ঋণপত্র মালিকদের দাবি সাধারণ শেয়ার মালিকদের দাবি থেকে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে নির্দিষ্ট হারে আয় প্রত্যাশা করে, তাদের জন্য অগ্রাধিকার শেয়ার একটি ভালো বিনিয়োগ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে আমাদের দেশে অগ্রাধিকার শেয়ারের সংখ্যা খুব বেশি দেখা যায় না। সাধারণ শেয়ারের ন্যায় অগ্রাধিকার শেয়ারের নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
ক) মালিকানা : অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের কোম্পানির পুরোপুরি মালিক বলা হয় না। তাদেরকে সাধারণ শেয়ার মালিক এবং বন্ড ও ঋণপত্র মালিকদের মাঝামাঝি অবস্থানে বিবেচনা করা হয়।
খ) রূপান্তরযোগ্যতা : অনেক অগ্রাধিকার শেয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় পর সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করার বিকল্প সুযোগ থাকে। ফলে বিনিয়োগকারী ইচ্ছে করলে এই সুযোগ ব্যবহার করে সাধারণ শেয়ার মালিক হতে পারে।
বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে অগ্রাধিকার শেয়ারের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। নিম্নে অগ্রাধিকার শেয়ারের সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলো :
সুবিধা
ক) নির্দিষ্ট হারে আয় : অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকরা নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পায়। ফলে শেয়ার মালিকদের আয়ের অনিশ্চয়তা কম থাকে।
খ) মুনাফা আয়ের উপর অগ্রাধিকার : লভ্যাংশ প্রদানে অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকরা সাধারণ শেয়ার মালিকদের লভ্যাংশ প্রদানের আগে অগ্রাধিকার পায়।
গ) সম্পদের উপর দাবি: কোম্পানির অবসায়ন বা বিলুপ্তির সময় সম্পদের উপর অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি সাধারণ শেয়ার মালিকদের দাবির পূর্বে বিবেচনা করা হয়। তবে অবশ্যই ঋণপত্র মালিকদের দাবির পর তাদের দাবি পূরণ করা হয়।
অসুবিধা
ক) নিয়ন্ত্রণ: অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের কোনো ভোটাধিকার থাকে না। ফলে অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের কোম্পানির উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
খ) সীমিত আয় : অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের আয় হার নির্দিষ্ট থাকে। ফলে কোম্পানি অতিরিক্ত মুনাফা করলে ও অগ্রাধিকার শেয়ার মা অলিকরা এর কোনো অংশ পায় না ।
যে শেয়ার ক্রয় করলে শেয়ার মালিকগণ অন্যান্য সকল প্রকার শেয়ার মালিকদের লভ্যাংশ কর্তনের পর আনুপাতিক হার লভ্যাংশ পায় অর্থাৎ বিলম্বে লভ্যাংশ পেয়ে থাকে তাকে বিলম্বিত শেয়ার বলে। কোম্পানি অবসায়নের ক্ষেত্রে এ শেয়ার হোল্ডারদের দাবি সকলের পরে মিটানো হয়। সাধারণত কোম্পানির প্রবর্তকগণ এ ধরনের শেয়ার ক্রয় করে থাকে। তাই এ ধরনের শেয়ারকে প্রবর্তকের শেয়ার বলেও অভিহিত করা হয়।
কোম্পানি গঠনের পরবর্তী সময়ে শেয়ার বিক্রয় করার ক্ষেত্রে যখন পুরাতন শেয়ার মালিকগণ ঐ শেয়ার ক্রয়ে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে তাকে রাইট শেয়ার বলে। অর্থাৎ পরবর্তী সময়ে কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রয় করা হলে পুরাতন শেয়ার মালিকগণ যখন ঐ শেয়ার ক্রয়ের অধিকার সংরক্ষণ করেন তখন ঐ বিক্রয়যোগ্য শেয়ারকে রাইট শেয়ার বলা হয়ে থাকে।
কোম্পানি গঠনের পরবর্তী সময়ে শেয়ার বিক্রয় করার ক্ষেত্রে যখন পুরাতন শেয়ার মালিকগণ শেয়ার ক্রয়ে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে তাকে রাইট শেয়ার বলে। অর্থাৎ পরবর্তী সময়ে কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রয় করা হলে পুরাতন শেয়ার মালিকগণ যখন ঐ শেয়ার ক্রয়ের অধিকার সংরক্ষণ করেন তখন ঐ বিক্রয়যোগ্য শেয়ারকে রাইট শেয়ার বলা হয়ে থাকে।
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের আরেকটি হাতিয়ার হচ্ছে বন্ড। পূর্বেই জেনেছ যে দলিল বা চুক্তিপত্রের মাধ্যমে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের থেকে ঋণ মূলধন সংস্থান করে সেটিকে বন্ড বলা হয়। দেশে অধিকাংশ কোম্পানি ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ মূলধনের সংস্থান করে। ফলে বিনিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে বন্ড এখনও আমাদের দেশে খুব বেশি পরিচিতি পায়নি।
বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে বন্ডের কিছু আলাদা স্বকীয়তা বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো:
ক) জামানত : বন্ডের বিপরীতে কোম্পানি সাধারণত স্থায়ী সম্পত্তি বা দলিলপত্রাদি জামানত হিসেবে রাখে। ফলে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধ করতে না পারলে এসব সম্পত্তি বিক্রি করে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ আদায় করতে পারে।
খ) পরিপক্বতার তারিখ : কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত বন্ডের একটি নির্দিষ্ট পরিপক্বতার তারিখ থাকে। উক্ত পরিপক্বতার তারিখে বিনিয়োগকারী বন্ডে উল্লিখিত লিখিত মূল্য ফেরত পায়।
গ) ঋণদাতা : বন্ড মালিকরা কোম্পানির ঋণদাতা হিসেবে গণ্য হয়। ফলে তাদের কোনো ভোটাধিকার থাকে না।
ঘ) রূপান্তরযোগ্যতা : কোম্পানি অনেক সময় বিনিয়োগকারীদের কাছে রূপান্তরযোগ্য বন্ড বিক্রি করে থাকে। এক্ষেত্রে বন্ড মালিকরা ইচ্ছে করলে ঋণপত্রে উল্লিখিত শর্ত অনুসারে তাদের ধারণকৃত বন্ডকে নির্দিষ্টসংখ্যক সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করতে পারে।
সুবিধা
ক) সুদের হার: সুদের হার নির্দিষ্ট থাকে বিধায় বন্ডে বিনিয়োগকারীদের আয় নির্দিষ্ট থাকে। ফলে তাদের আয়ে অনিশ্চয়তা কম থাকে। তবে কোনো কোনো সময় সুদের হার পরিবর্তনশীলও হতে পারে।
খ) ঝুঁকি কম: বন্ডের বিপরীতে স্থায়ী বা অন্যান্য সম্পত্তি জামানত হিসেবে রাখা হয় বিধায় বন্ড বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
গ) মুনাফা এবং সম্পদের উপর অধিকার : কোম্পানি কর্তৃক অর্জিত আয় থেকে সর্বপ্রথম বক্ত মালিকদের সুদ প্রদান করা হয়। অন্যদিকে কোম্পানি বিলুপ্তি বা অবসায়নকালে সম্পদ বিক্রির প্রাপ্ত অর্থ থেকে সর্বপ্রথম বন্ড মালিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করে অন্যদের দাবি পূরণ করা হয়। অর্থাৎ বস্তু মালিকদের দাবি সাধারণ এবং অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি থেকে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
অসুবিধা
ক) কম আয় হার : সাধারণ শেয়ার এবং অগ্রাধিকার শেয়ারের তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় বল মালিকদের আয় হার কম হয়।
খ) নিয়ন্ত্রণ : অগ্রাধিকার শেয়ারের ন্যায় বন্ড মালিকদের ভোটাধিকার থাকে না বিধায় বক্ত মালিকরা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
ডিবেঞ্চার হচ্ছে একটি জামানতবিহীন বন্ড। ফলে বন্ডের অধিকাংশ বৈশিষ্ট্য ডিবেঞ্চারে বিদ্যমান। বন্ড ও অগ্রাধিকার শেয়ারের ন্যায় ডিবেঞ্চারও আমাদের দেশে খুব বেশি দেখা যায় না।
বন্ডের তুলনায় এর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ডিবেঞ্চারের বিপরীতে কোনো জামানত থাকে না। ডিবেঞ্চারের বিপরীতে জামানত থাকে না বিধায় সব কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিনিয়োগকারীরা ক্রয় করে না। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত বড় স্বনামধন্য কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত ডিবেঞ্চারে তাদের অর্থ বিনিয়োগ করে।
বিনিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ডিবেঞ্চারের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নরূপ :
সুবিধা
ক) নিয়মিত আয় : বন্ডের ন্যায় বিনিয়োগকারীরা ডিবেঞ্চার থেকে নির্দিষ্ট হারে নিয়মিত আয় পায় ।
খ) নির্দিষ্ট সময় : ডিবেঞ্চারের নির্দিষ্ট মেয়াদের কারণে অনেক বিনিয়োগকারীর কাছে এটি জনপ্রিয়।
অসুবিধা
ক) জামানতহীনতা : ডিবেঞ্চারের বিপরীতে কোনো জামানত থাকে না বিধায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ
খ) নিয়ন্ত্রণ : বন্ডের ন্যায় ডিবেঞ্চার মালিকদের ভোটাধিকার থাকে না। ফলে কোম্পানির পরিচালনায় ডিবেঞ্চার মালিকদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
গ) মুনাফা ও সম্পদে অধিকার : ডিবেঞ্চার মালিকরা সাধারণ পাওনাদারদের সমান মর্যাদা ভোগ করে। ফলে কোম্পানির অর্জিত আয় থেকে ডিবেঞ্চার মালিকদের সুদ দেওয়ার আগে বড় মালিকদের সুদ পরিশোধ করা হয়। অনুরূপভাবে কোম্পানির বিলুপ্তির সময় বা অবসায়নকালে বন্ড মালিকদের দাবি বা পাওনা পরিশোধের পর ডিবেঞ্চার মালিকদের পাওনা পরিশোধ করা হয়।
যেকোনো দেশের অর্থনীতিতে শেয়ারবাজার মূলধন সংগ্রহের বাজার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য সাধারণ জনগণ বা বিনিয়োগকারীর প্রত্যাশা থাকে শেয়ারবাজার যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ক্রমশ উন্নতি সাধন করেছে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। অতএব, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। এতে লাভের সাথে সাথে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পূর্বে কোম্পানিগুলোর বার্ষিক আর্থিক বিবরণী সংগ্রহ করে কোম্পানির বিভিন্ন তথ্য যেমন: শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস), ব্যবসার ধরন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা, নিট সম্পদমূল্যসহ (এনএভি) অন্যান্য আর্থিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি শিল্প খাত এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান সংগ্রহ করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রয়োজনে বাজার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যায়। তবে কোনো অবস্থাতেই গুজবের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য থেকে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
শেয়ার ইস্যুকারী কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয়। এরূপ প্রতিষ্ঠানকে স্টক এক্সচেঞ্জ বলা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠান সাধারণ জনগণ বা প্রতিষ্ঠান থেকে কোম্পানিকে তহবিল সংস্থানে সাহায্য করে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের একটি নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবস্থা করে। বাংলাদেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে।
উল্লিখিত দুটি এক্সচেঞ্জে বিভিন্ন কোম্পানির সাধারণ শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবেঞ্চার এবং বন্ড ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয় হয়। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়ার সুবিধার্থে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারগুলোকে এ, বি, জি, এন এবং জেড ইত্যাদি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
সাধারণত শেয়ারবাজারের গতি বা সার্বিক অবস্থা বুঝার জন্য সূচক ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে :
ক) ডিএসই প্রশস্ত সূচক (DSE Broad Index)
খ) ডিএসই শরীয়া সূচক (DSE Shariah Index) এবং
গ) ডিএসই ৩০ সূচক (DSE 30 Index) নামে তিনটি সূচক ব্যবহার করা হয়।
অনুরূপভাবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে :
ক) সিএসই সকল শেয়ারমূল্য সূচক (CSE All Shares Price Index)
খ) সিএসসিএক্স সূচক (CSE Selective Categories Index) এবং
গ) সিএসই ৩০ সূচক (CSE 30 Index) নামে তিনটি সূচক প্রচলিত আছে।
শেয়ারবাজারের সূচক প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। এসব ওঠানামা বাজারের গতি বা দিক সম্পর্কে তথ্য দেয়। এ সূচকের ওঠানামা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য ওঠানামার উপর নির্ভর করে। অধিকাংশ শেয়ারের দাম বাড়লে সূচক বাড়ে, আবার অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলে সূচক কমে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা দুটি উপায়ে বিনিয়োগ করতে পারে। যথা :
ক) প্রাথমিক বাজারের (Primary Market) মাধ্যমে
খ) সেকেন্ডারি বাজারের (Secondary Market) মাধ্যমে।
ক) প্রাথমিক বাজার : প্রাথমিক বাজার বলতে কোম্পানি যে বাজারে শেয়ার বিক্রির প্রথম প্রস্তাব (Initial public offering) করে, সে বাজারকে বুঝায়। কোনো কোম্পানি প্রথমবারের মতো বাজারে শেয়ার বিক্রি করলে সেটিকে শেয়ার বিক্রির প্রথম প্রস্তাব বলা হয়। একজন বিনিয়োগকারী কোনো কোম্পানির শেয়ার বিক্রির প্রথম প্রস্তাবে অংশগ্রহণ করে শেয়ার ক্রয় করলে, সে প্রাথমিক বাজারে শেয়ার ক্রয় করেছে বলে মনে করা হয়।
খ) সেকেন্ডারি বাজার : কোম্পানি কর্তৃক প্রথমবার বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির পর বিনিয়োগকারীরা নিজেদের মধ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। যে বাজারে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের মধ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে, সে বাজারকে সেকেন্ডারি বাজার বলা হয়।
একটি কোম্পানির অর্জিত লাভ বা মুনাফা শেয়ার মালিকদের প্রাপ্য আয়। ফলে অর্জিত লাভ বা মুনাফা শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। সাধারণত কোম্পানি অর্জিত লাভ বা মুনাফার পুরো অংশ শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টন করে না। লাভ বা মুনাফার একটি অংশ ভবিষ্যতে ব্যবসার কাজে অর্থায়নের জন্য সংরক্ষিত করে এবং বাকি অংশ শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টন করে। লাভ বা মুনাফার যে অংশ শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়, সে অংশকে লভ্যাংশ বলা হয়। কোম্পানি সাধারণত দুইভাবে লভ্যাংশ দিতে পারে।
ক) নগদ লভ্যাংশ
খ) স্টক লভ্যাংশ বা বোনাস শেয়ার
ক) নগদ লভ্যাংশ : যে লভ্যাংশ নগদ টাকায় পরিশোধ করা হয়, সে লভ্যাংশকে নগদ লভ্যাংশ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ: মনে কর, একটি কোম্পানি ১০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। একজন শেয়ার মালিক ঐ কোম্পানির ১০ টাকা মুল্যের ৫০০ শেয়ার ধারণ করে। উক্ত ব্যক্তি নগদ লভ্যাংশ হিসেবে ১০%×৫,০০০ টাকা বা ৫০০ টাকা পাবে।
খ) স্টক লভ্যাংশ : কোম্পানি অনেক সময় নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে স্টক লভ্যাংশ বা নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি স্টক লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। কোম্পানি সাধারণত বর্তমানে ইস্যুকৃত শেয়ারের উপর আনুপাতিক হারে স্টক লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। ফলে কোম্পানির শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। মনে কর, একটি কোম্পানির বর্তমানে ১০ টাকা মূল্যের ১ কোটি শেয়ার আছে। কোম্পানি ৫০ শতাংশ বা ২:১ অনুপাতে স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ফলে কোন বিনিয়োগকারীর বর্তমানে ৫০০টি শেয়ার থাকলে স্টক লভ্যাংশ পাবার পর শেয়ার সংখ্যা ৭৫০টি হবে। অনুরূপভাবে কোম্পানির মোট ইস্যুকৃত শেয়ার ১.৫ কোটি হবে।
কোম্পানিকে প্রতিবছর লভ্যাংশ সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন: অর্জিত লাভের কত অংশ লভ্যাংশ দেয়া হবে, নগদ লভ্যাংশ না স্টক লভ্যাংশ দেয়া হবে ইত্যাদি। এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রতিটি কোম্পানির সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকে, যা কোম্পানিকে লভ্যাংশ প্রদানে দিকনির্দেশনা দিতে পারে। এসব নীতিমালাকে লভ্যাংশ নীতি বলে। সাধারণত তিন প্রকার লভ্যাংশ নীতি পরিলক্ষিত হয়। যথা-
ক) স্থিতিশীল টাকা লভ্যাংশ নীতি : এ নীতি অনুযায়ী প্রতিবছর অর্জিত লাভ থেকে সমপরিমাণ টাকা লভ্যাংশ দেয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ: একটি কোম্পানি প্রতিবছর শেয়ারপ্রতি ১০ টাকা লভ্যাংশ দিলে এটিকে স্থিতিশীল লভ্যাংশ নীতি বলা হবে। শেয়ারপ্রতি আয় যত বেশি হোক না কেন, কোম্পানি গত বছরগুলোতে প্রদত্ত লভ্যাংশের সমপরিমাণ লভ্যাংশ প্রদান করে। তবে এ পদ্ধতিতে সাধারণত লভ্যাংশের পরিমাণ কমে না।
খ) লভ্যাংশ প্রদান অনুপাত নীতি : এ নীতি অনুযায়ী কোম্পানি প্রতিবছর আয়ের কত অংশ লভ্যাংশ প্রদান করবে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানি প্রতিবছর আনুপাতিক হারে লভ্যাংশ প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, মনে কর, কোনো কোম্পানি ৫০% লভ্যাংশ প্রদানের আনুপাতিক হার হিসেবে নির্ধারণ করে। ফলে কোনো বছর যদি কোম্পানির অর্জিত আয় ২ কোটি টাকা হয়, তাহলে কোম্পানি লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ার মালিকদের ২ কোটি x ৫০% বা ১ কোটি টাকা প্রদান করবে।
গ) স্থির লভ্যাংশ সাথে অতিরিক্ত লভ্যাংশ নীতি : যেসব কোম্পানির আয় স্থিতিশীল বা নিয়মিত নয়, সেসব কোম্পানির জন্য এটি একটি আদর্শ লভ্যাংশ নীতি। এ নীতি অনুযায়ী কোম্পানি প্রতিবছর ন্যূনতম স্থিতিশীল লভ্যাংশের সাথে অতিরিক্ত লভ্যাংশ প্রদান করে। অন্যান্য লভ্যাংশ নীতির তুলনায় এটি অনেক নমনীয় বিধায় অনেক কোম্পানি এই লভ্যাংশ নীতি অনুসরণ করে।